সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার (নন-সাবমিশন) মামলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মেয়রপ্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম চার্জ গঠনের আদেশ দেন। একই সঙ্গে ৯ ফেব্র“য়ারি এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।
চার্জ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হল। ইশরাক হোসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে।
শুনানির সময় আদালতে ইশরাক হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। আসামি পক্ষে ডিসচার্জ (অব্যাহতি) আবেদন করা হয়। অপরদিকে দুদকের পক্ষে চার্জ গঠনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ডিসচার্জ আবেদন নাকচ করে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ইশরাক হোসেন ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের সম্পদের বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয় দুদক। ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর দুদকের কনস্টেবল তালেব কমিশনের নোটিশটি জারি করতে ইশরাকের বাসভবনে যান। কিন্তু ইশরাক সেখানে না থাকায় উপস্থিত চারজন সাক্ষীর সামনে বাসভবনের নিচতলায় প্রবেশপথের বাম পাশের দেয়ালে স্কচটেপ দিয়ে ঝুলিয়ে নোটিশটি জারি করেন। এরপর কমিশনের দেয়া সাত কার্যদিবসের মধ্যে ইশরাক হোসেন সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি। এ ঘটনায় ২০১০ সালের ২৯ আগস্ট রাজধানীর রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে এ মামলাটি করা হয়। দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক সামছুল আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত বছরের ৫ মে চার্জশিট আমলে নিয়ে ইশরাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। একই সঙ্গে তিনি মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন। এ মামলায় ৯ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন ইশরাক।
রাজনৈতিক হয়রানি- ইশরাক : দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় বিন্দুমাত্র বিচলিত নন বলে জানিয়েছেন ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, রাজনীতি করব আর মামলা হবে না, জেল হবে না- এটা হয় নাকি বাংলাদেশে এই মামলাটিই করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করার জন্য। ২০০৮ সালে আমাকে একটা নোটিশ দেয়া হয়েছিল আমার সব উইল স্ট্যাটম্যান্ট দেয়ার জন্য। তখন আমি ছাত্র ছিলাম। আর পড়াশোনার জন্য বাইরে ছিলাম। ওই নোটিশ সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না।
সেটার জন্যই মামলা দেয়া হয়েছে। আমি যাতে এর জবাব দেই। এখন আবার এসে তারা এই মামলা নাড়াচাড়া করছে। আমি বলব, এই মামলা করে লাভ নেই। আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত না।
এসব বাধা আমি কোনো বাধা মনে করি না। বুধবার রাতে বাংলামোটরে নির্বাচনী গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ইশরাক বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় তো সব দলের নেতা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে মামলা হয়েছে। এই সরকার আসার পর তাদের এবং তাদের পরিবারের মামলাগুলো গায়েব করে দিয়েছে। আর আমরা যারা বিএনপি করি, তাদের মামলাগুলো সক্রিয় রেখেছে।